হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু’র নীতি কথা,
উপদেশ,বাণী এবং প্রবাদ বাক্যসমূহের অন্যতম প্রধান
বৈশিষ্ট্য এই যে, এগুলি নির্ভুল চিন্তা, বিশুদ্ধ ও সূক্ষ
পর্যবেক্ষণ এবং জীবন ও মানব স্বভাবের সুগভীর
অধ্যায়ের কথা সুস্পষ্টরূপে প্রমাণ করে যেন তা
সুদীর্ঘ অভিজ্ঞতা, চিন্তা-ভাবনা ও নিবিষ্ট
অধ্যয়নের সারনির্যাস রূপে পেশ করা হয়েছে। যা
হৃদয়ের গভীরে এবং জীবনের অতলান্তে প্রবেশের
মাধ্যমেই করা সম্ভব।
পাঠকবৃন্দের সামনে তুলে ধরছি তাঁর ২০টি অমূল্য
বাণী।
১. প্রতিটি মানুষের মূল্য তার যোগ্যতায়।
২. মানুষের সাথে তাদের বুদ্ধি পরিমাণ কথা বলো।
তোমরা কি চাও যে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল ‘মিথ্যা
সাব্যস্ত’ হোন?
৩. অভিজাত লোকের হামলা সম্পর্কে সতর্ক হও যখন
সে ক্ষুধার্ত হয়। আর ইতর লোকের হামলা হতে সতর্ক
হও যখন সে পূর্ণ উদর হয়।
৪. হৃদয়সমূহ একত্র করো এবং তা ধরে রাখতে
হেকমতের আশ্রয় গ্রহণ করো । কেননা শরীরের ন্যায়
হৃদয়ও ক্লান্তি ও একঘেয়েমী বোধ করে।
৫. নফস হলো প্রবৃত্তির পূজারী। সহজগামী আমোদ-
প্রমোদের অভিলাসী, কু-প্ররোচনায় অভ্যস্ত,
পাপাচারে আসক্ত, আরাম প্রিয় ও কর্মবিমুখ। যদি
তাকে বাধ্য করো তাহলে সে দুর্বল হয়ে পড়বে। আর
যদি তাকে ছেড়ে দাও তাহলে (তুমি) ধ্বংস হয়ে
যাবে।
৬. তোমাদের কেউ যেন আপন প্রতিপালক ছাড়া অন্য
কারো আশা না করে এবং তাঁর ‘শাস্তি’ ছাড়া অন্য
কিছুকে ভয় না করে। তোমাদের কেউ যেন যা
জানে না তা শিখতে এবং না জানা বিষয়ে
জিজ্ঞাসিত হলে ‘জানি না’ বলতে সংকোচ বোধ
না করে।
৭. অভাব বিচক্ষণ ব্যক্তিকেও যুক্তির ক্ষেত্রে
নির্বাক করে দেয়। অভাবী যেন নিজ দেশেই
পরবাসী।
৮. অক্ষমতা একটি বিপদ, ধৈর্যের অর্থ সাহসিকতা,
ভোগ বিলাসিতায় নির্মোহতা অমূল্য সম্পদ এবং
ধর্মানুরাগ জান্নাত লাভের মাধ্যম।
৯. শিষ্টাচার হলো চির-নতুন পোশাক এবং চিন্তা
হলো স্বচ্ছ আয়না।
১০. দুনিয়া যখন কারো প্রতি প্রসন্ন হয় তখন অন্যের
গুণাবলীও তাকে ধার দেয়, কিন্তু যখন অপ্রসন্ন হয় তখন
তার নিজস্ব গুণাবলীও ছিনিয়ে নেয়।
১১. (অন্তরে) যে যাই গোপন করে তা তার জিহ্বার
ফাঁকে বের হয়ে পড়ে এবং মুখণ্ডলের অভিব্যক্তিতে
ধরা পড়ে।
১২. আল্লাহ্ যখন তোমাকে স্বাধীন বানিয়েছেন
তখন তুমি অন্যের গোলাম হয়ো না।
১৩. স্বপ্ন আর আকাঙ্ক্ষার উপর ভরসা করে বসে
থেকো না, কেননা এটা হলো মূর্খ মানুষের পুঁজি।
১৪. তোমাদেরকে কি আদর্শ আলেমের পরিচয় বলব
না? যিনি আল্লাহর বান্দাদের সামনে আল্লাহর
নাফরমানীকে মনোহর রূপে তুলে ধরেন না এবং তাঁর
‘পাকড়াও’ সম্পর্কে তাদেরকে নিরুদ্বিগ্ন করে দেন
না। এবং তাঁর রহমত সম্পর্কে হতাশ করে দেন না।
১৫. মানুষ সব বুঝে বেঘোর, মৃত্যু আসা মাত্র জেগে
উঠবে।
১৬. মানুষ যা জানে না তার প্রতি বিরূপ হয়ে থাকে।
১৭. যুগের (স্বভাব প্রকৃতির) সঙ্গে মানুষের সাদৃশ্য
পিতৃ-সাদৃশ্যের চেয়ে অধিক।
১৮. মানুষ তার জিহ্বার নীচে লুক্কায়িত থাকে।
১৯. যে মানুষ আপন মর্যাদার সীমা বুঝে তার কোনো
ধ্বংস নেই।
২০. কখনো কখনো একটি মাত্র শব্দ বিরাট বঞ্চনার
কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
হযরত আলী ইবনে আবু তালিব রাদিয়াল্লাহু তা’আলা
আনহু’র বাণী এমন বাণীনিচয় আসলে মানুষের
মনুষ্যত্বের বিকাশে হতে পারে এক অনবদ্য পুঁজি। এমন
সারগর্ভ বাক্যসমূহ পরিপালনে একজন পূর্ণাঙ্গ মানব
হওয়ার অনুপম সুযোগ তৈরী হয় নিঃসন্দেহে।
Saturday, January 9, 2016
হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু’র নীতি কথা, উপদেশ,বাণী
হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু’র নীতি কথা,
উপদেশ,বাণী
Reviewed by Rasel.scb
on
2:30 AM
Rating: 5
হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু’র নীতি কথা, উপদেশ,বাণী এবং প্রবাদ বাক্যসমূহের অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য এই যে, এগুলি নির্ভুল চিন্তা, বিশুদ্ধ...
Related posts
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments: